ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যে সকল মার্কেট প্লেস গুলোতে কাজ করবেন
Market Place

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যে সকল মার্কেট প্লেস গুলোতে কাজ করবেন

অনলাইনে এমন ওয়েবসাইট যেখানে বায়াররা তাদের কাজ করার মত দক্ষ লোক বা ফ্রিল্যান্সার খোঁজ করতে আসে। আবার যারা ফ্রিল্যান্সার, তারা কাজ খোজার জন্য এসব সাইটগুলো প্রবেশ করে। অনেক ফ্রিল্যান্সারদের মধ্য হতে যাচাই বাছাই করে বায়ার তার কাজের জন্য যোগ্য কাউকে বাছাই করে কাজ দেয়। এসব সাইট গুলোকেই মার্কেট প্লেস বলে। মার্কেট প্লেসগুলো বায়ার এবং ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে সংযোগস্থাপনকারী হিসেবে কাজ করে। বায়াররা এসব মার্কেট প্লেসকে মূলত পেমেন্ট করে। সেই পেমেন্ট ফ্রিল্যান্সারদের মার্কেট প্লেসের অ্যাকাউন্টে জমা হয়। পরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সেই ডলারগুলো উঠানো যায়। এসব মার্কেট প্লেসে ফ্রিল্যান্সারদের কাজের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের রেটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো দেখেই বায়াররা তাদের কাজের জন্য যোগ্য ফ্রিল্যান্সার বাছাই করতে পারেন।
অনলাইনে অনেকগুলো মার্কেট প্লেস রয়েছে। বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের, বিভিন্ন ধরনের মার্কেট প্লেস রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মার্কেট প্লেসের সাথে সংক্ষেপে পরিচিত করার চেষ্টা করব। ভবিষ্যত পর্বগুলো বিস্তারিত আকারে পোস্ট আসবে।
আপওয়ার্ক : এই ওয়েবসাইটটি পূর্বে oDesk নামে পরিচিত ছিল, কিছুদিন পূর্বে UpWork এ পরিবর্তন হয়েছে, যুক্ত হয়েছে বেশ কিছু ফিচার| Elance নামক আরেকটি জব মার্কেট ও এর সাথে সংযুক্ত হয়েছে|
UpWork ই বর্তমানে ফ্রিল্যান্স মার্কেট লিডার| এই ওয়েবসাইটে বায়াররা বিভিন্ন ধরনের জব পোস্ট করে থাকেন, ফ্রীলেন্সারগন তাদের স্কিল অনুযায়ী অ্যাপ্লাই করেন| বায়ার সব আবেদনকারী মধ্যে থেকে বাছাই করে ইন্টারভিউ নিয়ে থাকেন| বেশিরভাগ ক্ষেত্রে UpWrok মেসেজ অথবা Skype chat এর মাধ্যমে ইন্টারভিউ নিয়ে থাকেন, কিছু ক্ষেত্রে ভিডিও কনফারেন্সের  মাধ্যমেও এই প্রক্রিয়া সম্পাদিত হয়।
ফাইভার: বর্তমানে এই ওয়েবসাইটি বেশ জনপ্রিয়| নতুনদের কাজ পাওয়ার জন্যে Best মার্কেট প্লেস, এইখানে বায়ার এর পরিবর্তে আপনি কাজ পোস্ট করবেন, কি কি জানেন তার বিস্তারিত বিবরণ দিবেন। Sample জব পোস্ট এর সাথে যুক্ত করে দিতে হবে। বায়ারের কাছে আপনার সার্ভিসটি পছন্দ হলে কিনে নিবে। কাজের মূল্য দেখতে কম হলেও শুরু করার পর আপনি দেখবেন ভিন্ন চিত্র, এক একটি জব থাকে $10 থেকে শুরু করে $100 বা ততোধিক পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
পিপল পার আওয়ার: এটি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি অনলাইন মার্কেট প্লেস। এখানে বায়ার সহজে জবের জন্য অফার করতে পারে। আবার যে কাজ করবে সেও তার স্কিল সেল করতে পারবে। এখান থেকে কাজ কিনে আবার এই মার্কেট প্লেসে সেল করতে পারবেন। এই মার্কেট প্লেসে ফিক্সড এবং আওয়ার্লি জব করার সুযোগ আছে।
99 ডিজাইনঃ এই মার্কেট প্লেস শুধুমাত্র ডিজাইনারদের জন্য, এই ওয়েবসাইট এ বায়ার তার কাজের বিবরণ লিখে জব পোস্ট করে থাকেন, আগ্রহী ডিজাইনাররা কাজের বিবরণ অনুযায়ী ডিজাইন করে সাবমিট করে থাকেন। এইটা একটা কমপিটিশনাল সিস্টেম মার্কেট প্লেস। বায়ায়ারের কাছে যার কাজ ভালো লাগে তার ডিজাইন ব্যবহার এর জন্যে চূড়ান্ত করেন এবং শুধুমাত্র বিজয়ী ফ্রিল্যান্সার টাকা পেয়ে থাকেন। এই ওয়েবসাইটে কাজের জন্যে উচ্চ মূল্য পাওয়া যায়। তবে নতুনদের কাজ শিখার/প্র্যাক্টিস করার জন্যে বেস্ট প্লেস। অন্যদের কাজ অনুকরণ করে ডিজাইন করবেন, নিজের দক্ষতা বাড়বে।
ইনভ্যাটো: এই Market-place এর ধরণ সম্পূর্ণ ভিন্ন, এটি একটি Passive Income এর জন্যে উৎকৃষ্ট Market-place। এই Marketplace এ বেশ কয়েকটি প্লাটফর্ম আছে, যেখানে আপনি আপনার তৈরি করা কাজ বিক্রি করতে পারবেন , যা পরবর্তিতে বায়ার কিনে নিয়ে নিজের মত করে কাস্টমাইজ করে ব্যবহার করবে। প্রথম দৃষ্টিতে প্রোডাক্ট এর মূল্য কম মনে হতে পারে, কিন্তু এইখান থাকেই আপনি কোটিপতি হতে পারেন। উদাহরণ হিসাবে বলি, একটা বিজনেস কার্ড এর মূল্য $6, এই প্রোডাক্টি যখন ১০০ বার বিক্রয় হবে, তখন একটি বিজনেস কার্ড এর জন্যে আপনার বিক্রয় মূল্য দাঁড়াবে $600। পাবেন এমন রেট কি আর পাবেন অন্য কোন মার্কেট প্লেস এ? মূল্য বিষয় হচ্ছে আপনি একবার একটি প্রোডাক্ট আপলোড করার পর মার্কেট প্লেস টিম আপনার প্রোডাক্টটি review করবে, বিক্রির জন্যে approve হলে, আর আপনার তেমন কিছু করতে হবে না, যদি না বায়ার template টি ব্যবহার করতেগিয়ে কোন সমস্যায় পড়ে।
মাইক্রোওয়ার্কারঃ এই মার্কেট প্লেসে সব ছোট ছোট কাজগুলো পাওয়া যায়। যারা একবারে নতুন তাদের জন্য এই মার্কেট প্লেসে কাজ করা অনেক সহজ। ফোরাম পোস্টিং, সাইন আপ, ফেসবুক লাইক-ভোট, টুইটার টুইট-রিটুইট, ক্লিক-সার্চ, বুক মার্ক, ইয়াহু এনসার এই কাজ গুলো মাইক্রোওয়ার্কারে খুব বেশি পাওয়া যায়। কাজের জন্য বিড করতে হয় না। কাজ গুলো খুব ছোট হয় এবং ৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে কাজ গুলো করা যায়। যত মার্কেট প্লেস আছে সবচেয়ে সহজ এই মার্কেট প্লেসে কাজ করা।
ক্লিকব্যাংকঃ এটি একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস। এখানে সদস্য হয়ে বিভিন্ন পণ্য প্রচারের লিংক নিজের সাইটে রাখতে পারেন এবং সেই লিংকের মাধ্যমে মূল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে পণ্য বিক্রি হলে ফ্রিল্যান্সাররা বিক্রি হতে একটা নির্দিষ্ট কমিশন পাবে।
ক্লিক ব্যাংকের প্রোডাক্ট গুলো ডিজিটাল প্রোডাক্ট। অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের ই-বুক, টিউটোরিয়াল সিডি, সফটওয়্যার সিডিসহ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ডিজিটাল পণ্য এখানে পাওয়া যায়। ক্লিকব্যাংক একটি মার্কেট প্লেস। সেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন অফার নিয়ে আসে। ফ্রিল্যান্সাররা সেই সব অফার নিয়ে অ্যাফিলিয়েশন করে। যতবেশি প্রোডাক্ট বা সেবা বিক্রি করা যায়, ততবেশি কমিশন জমা হবে।
এ সাইটের লিংক: clickbank.com
অ্যামাজনঃ অ্যামাজন হচ্ছে অনলাইনে পণ্য বিক্রির সবচাইতে বড় স্টোর। অ্যাফিলিয়েশনের ক্ষেত্রেও সবচাইতে বড় সেক্টর হচ্ছে অ্যামাজন। এখানে পণ্যের মধ্যে শিপিং পণ্য বেশি। দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত ছোট থেকে বড় সকল পণ্য অ্যামাজনে পাওয়া যায়। সে সব পণ্যের বিক্রির জন্য অ্যাফিলিয়েশন করা যায়।
সাইটের লিংক: affiliate-program.amazon.com
আরও অনেক অনেক ধরণের মার্কেট প্লেস রয়েছে। যেমনঃ কিছু মার্কেট প্লেস রয়েছে যেখানে টি-শার্ট, মগ থেকে শুরু করে আরও অন্যান্য গিফট পণ্যের ডিজাইন করে সেগুলোকে প্রচার করার মাধ্যমে বিক্রি করে গ্রাফিক ডিজাইনাররা ভাল আয় করতে পারে। সেরকম কয়েকটি ওয়েবসাইটের লিংক হচ্ছে: teespring.com, zazzle.com
আবার কিছু মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে ওয়েবসাইট বিক্রি করা যায়। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে আয় হয় (অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয়, অ্যাফিলিয়েশনের মাধ্যমে আয় কিংবা অন্য যেকোনভাবে আয় হয়) এমন সাইটগুলোকেই শুধুমাত্র বিক্রি করা যাবে। যেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বেশি আয় হয়, সেই ওয়েবসাইট বেশি বিক্রি হতে পারে।
এরকম সাইটগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হচ্ছে: flippa.com

About insider

Check Also

How To Submit an Effective Buyer Request on fiverr?

কিভাবে উপযুক্ত বায়ার রিকোয়েস্ট পাঠাবেন?

যারা নতুন তারা এই পোস্ট অবশ্যই ভালো করে পড়বেন, সবাই যেন বায়ার রিকোয়েস্ট যথাযথভাবে পাঠাতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *